সোমবার, ৮ জানুয়ারী, ২০১৮

ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশের মধ‍্যে কে শ্রেষ্ঠ ?

একবার ঋষিদের মনে প্রশ্ন উঠলো যে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশের মধ‍্যে কে শ্রেষ্ঠ ? তখন দেবর্ষি নারদ পরামর্শ দিলেন তাদের মধ‍্যে কেউ একজন গিয়ে ত্রিদেবের পরীক্ষা নিয়ে দেখতে ,  যে দেবতা ত্রিগুনাতীত হবেন তিনিই শ্রেষ্ঠ এই কথায় ভৃগু ঋষি গেলেন তাদের পরীক্ষা নিতে।

প্রথমে তিনি ব্রহ্মলোক গেলেন এবং সেখানে ব্রহ্মাকে কটু ভাষায় তিরস্কার করলেন। ব্রহ্মা এতে ক্রুদ্ধ হলে ভৃগু ঋষি তার স্তব করে তাকে শান্ত করেন এবং তার আসার কারন জানান। ব্রহ্মা বললেন " আমি এই অনন্ত ব্রহ্মান্ডের রচয়িতা এবং তা নিয়ে আমি গর্বিত। তাই আমি রজ গুনের অধীন। সেই কারনে আমি শ্রেষ্ঠ নই।"

এরপর তিনি কৈলাসে গেলেন। তখন শিব ও পার্বতী একান্তে ছিলেন এবং নন্দি ও অন‍্যান‍্য গনেদের আদেশ দিয়েছিলেন যে কাউকে যেনো ভেতরে প্রবেশ করতে না দেওয়া হয়। কিন্তু ভৃগু ঋষি কোনো বাধা না মেনে কৈলাসে প্রবেশ  করলেন। এতে শিব অত‍্যান্ত ক্রুদ্ধ হয়ে ভৃগু ঋষিকে ভষ্ম করতে উদ‍্যত হলেন, কিন্তু দেবী পার্বতীর অনুরোধে থেমে গেলেন। এরপর ভৃগু ঋষি শিবকে স্তবে তুষ্ট করে নিজের আসার কারন জানালেন। শিব বললেন "ধ্বংসের দেবতা হওয়ার কারনে আমি তমোগুনের অধীন। এই কারনে আমিও শ্রেষ্ঠ নই।"


এরপর ভৃগু ঋষি বৈকুন্ঠ ধামে প্রস্থান করলেন। সেখানে তিনি দেখলেন ভগবান বিষ্ণু যোগনিদ্রায় মগ্ন। এই দেখে তিনি শ্রীহরির বুকে পদাঘাত করলেন। এতে ভগবান বিষ্ণু জেগে তার চরন ধরে বললেন "এ আপনি কি করলেন ঋষিবর! আমার ছাতি বজ্রের মতো কঠোর, আপনার কোমল চরনে যদি কোনো ব‍্যাথা পেয়ে থাকেন তাহলে আমি অত‍্যন্ত দুঃখিত। আমি নিদ্রায় থেকে আপনার সেবা করতে পারিনি এর জন‍্যও আমায় ক্ষমা করুন।" এতে ঋষি ভৃগু লজ্জিত হলেন এবং ভগবান বিষ্ণুর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে ফিরে গেলেন। তিনি ঋষিদেরকে গিয়ে বললেন ভগবান শ্রীহরি একমাত্র ত্রিগুনাতী
ত। তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ।

শুক্রবার, ৫ জানুয়ারী, ২০১৮

, যদি আপনার অহংকার থাকে এবং ভগবানের প্রতি ভক্তি শ্রদ্ধা না থাকে তা হলে আপনার জীবনে কিহবে?

হরে__কৃষ্ণ

সকলে আমার প্রনাম নিবেন।

এই পোষ্টি পড়ার জন্য আনুরধ রইল।

এই পৃথিবীতে আপনার যতই ধন সম্পদ থাক না কেনো, যদি আপনার  অহংকার থাকে এবং ভগবানের প্রতি ভক্তি শ্রদ্ধা না থাকে তা হলে আপনার জীবনে শান্তি থাকবে না।
সমাজে আপনার যতই নাম দাম থাক না কেনো, আপনি যদি ভগবানের প্রতি শ্রদ্ধা শিল না হন, তা হলে আপনার অধঃপতন নিশ্চিত।

পৃথীবিতে আপনার কি আছে আর কি নেই, সেটা বড় কথা না, আপনি ভগবানের প্রতি কতটা নির্ভর করেন/ ভগবানের কতটা পুজা করেন সেটাই বড় কথা।
পৃথিবীতে সব কিছু থেকেও যদি আপনি ভগবানের কোনো কর্ম না করেন / ভক্তি শ্রদ্ধা না করেন, তা হলে আপনা মানব জন্ম বিথা।

এই পৃথইথীর কোনো কিছুই আপনার সাথে যাবে না, শুধু কৃষ্ণ নাম ছাড়া।
এই পৃথিবীর কেউ আপন না, শুধু ভগবান ছাড়া। মা- বাবা, ভাই - বোন এরা শুধু উপলক্ষ মাত্র।

মনে রাখবেন জন্ম নিলে মৃত্যু অনির্ভয্য।
তা সময় থাকতে সময়ের মৃল্য দিন।
কথায় আছে সমায়ের সত ব্যবহার করা বুদ্ধি মানের কাজ।

#হরে__কৃষ্ণ

মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারী, ২০১৮

শ্রী শ্রী ব্রহ্ম হরিদাস ঠাকুরের জন্মভূমি আশ্রম কেঁড়াগাছী

জয় হরিদাস ঠাকুর।
 সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া থানার অন্তর্গত কেড়াগাছি গ্রামে ১৩৭২ বঙ্গাব্দে, ১৪৪৯ খ্রীষ্টাব্দে অগ্রাহয়ন মাসে নামাচার্য্য শ্রীশ্রী ব্রহ্ম হরিদাস ঠাকুর জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম সুমতি মিশ্র এবং মাতার নাম গৌরীদেবী। হরিদাসের বয়স যখন দু'মাস সেই সময় সুমতি মিশ্র পরলোক গমন করেন। সতীসাধ্বী গৌরীদেবী স্বামীর চিতায় সহমরন বরণ করেন এবং ঠাকুর হরিদাস সম্পূর্ণ অনাথ হয়ে পরেন। শিশু হরিদাস ঠাকুরের লালন পালনে কেউ এগিয়ে না এলে সুমতি মিশ্রের বন্ধু চাষী হাবিবুল্লা কাজী দয়া পরবশ হয়ে এই অনাথ শিশুটির দায়িত্ব গ্রহন করেন। হাবিবুল্লা কাজীর স্ত্রীর আদর যত্নে হরিদাস প্রতিপালন হয়ে থাকেন। এই ভাবে যবনের অন্নে যবনের ঘরে প্রতিপালন হবার জন্যই তাঁকে যবন হরিদাস বলা হয়। বাল্য থেকে কৈশরে পদার্পন করার পর পালন কর্তা তাঁকে গরু চরানোর কর্মে নিয়োগ করেন। হরিদাসের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি তাঁর অন্তরে যেন কিসের একটা প্রবল আকর্ষণ অনুভব করতে থাকেন। যার ফলে যেখানেই হরিনাম সংকীর্ত্তণ হতো সেখানেই ছুটে যেতেন হরিদাস।
অন্তরে ঈশ্বর ভক্তি ও হরিনামে প্রবল অনুরাগ দেখা দিল, এবার তিনি সব সময় উচ্চস্বরে হরিনাম জব করতে লাগলেন। এমনি ভাবে চলতে থাকাবস্হায় কাজীর দরবারে তাঁর বিরুদ্ধে নালিশ গেল, কাজীর হুকুমে জল্লাদ হরিদাসের পায়ে রশি বেঁধে টানতে টানতে বাইশ বাজারে বেত্রাঘাত করে ঘুরালেও তাঁর হরিনাম বন্ধ করতে পারলো না। হরিনামের প্রতি একনিষ্ঠ অবিচল ভক্তি দেখে সকলেই বিস্মিত ও স্হম্ভিত হলো। বিচারক কাজী সাহেব তার অন্যায় বিচারের অনুতাপ প্রকাশ করে ঠাকুর হরিদাসকে অন্যত্র চলে যাবার জন্য অনুরোধ করলেন। নিজ গ্রামের পারিপার্শ্বিক প্রতিকুলাবস্হা অনুধাবন করে কোন এক নির্জন নিশিথে ঠাকুর হরিদাস অজানার উদ্দেশ্যে পথে বেরিয়ে পরলেন। ঘুরতে ঘুরতে ঠাকুর হরিদাস তৎকালীন সময়ের প্রতাপশালী রাজা রামচন্দ্র খাঁর অধীনে গহীনে জঙ্গলে আশ্রয় নিলেন। সেই জঙ্গলাকীর্ণ স্হানটি আজকের বেনাপোল নামাচার্য্য শ্রী শ্রী ব্রহ্ম হরিদাস ঠাকুরের পাটবাড়ী আশ্রম। এহেন জঙ্গলাকীর্ণ আশ্রমে ঠাকুর হরিদাস যখন হরিনাম জপ সাধনে নিমগ্ন তখন হরিদাস ঠাকুরের প্রতিদিন তিন লক্ষ বার হরিনাম জপের কথা চারিদিকে ছড়িয়ে পরতে থাকে। তার সুধাময় কন্ঠের মধুর হরিনামাকর্ষনে দলে দলে ভক্ত ছুটে এল পর্ণ কুঠিরে। পর্ণকুঠির হলো প্রেম কানন। ভক্তের আগমনে সেই জঙ্গলাকীর্ণ আশ্রম পরিনত হলো মহাতীর্থ স্হানে। অত্যাচারী রাজা রামচন্দ্র খাঁ ঠাকুর হরিদাসের গুনগান সহ্য করতে না পেরে তাঁকে জ্যান্ত পুরিয়ে মারার অভিপ্রায় বিফল হলে তৎকালীন হীরানামক এক বার- বনিতাকে দিয়ে তার সাধন, ভজন, যশ, খ্যাতি, ধর্ম নাশ করার চক্রান্ত করতে থাকে। সমস্ত চক্রান্তে ব্যর্থ হয়ে বার-বনিতা হীরা হরিনাম মহামন্ত্রে দিক্ষিত হয়ে হরিদাস ঠাকুরের পরম বৈষ্ণবী হয়ে যান। নামাচার্য্য শ্রী শ্রী ব্রহ্ম হরিদাস ঠাকুর ছিলেন প্রকৃত বৈষ্ণবের জলন্ত নিদর্শন এবং দৈন্যের অবতার তিনি প্রতিদিন তিন লক্ষ বার হরিনাম জপ করে নামাচার্য্য নামে খ্যাত হন এবং ব্রক্ষত্ব অর্জন করেন। তিনি হরিনাম করতে করতে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর কোলে অন্তিম নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এবং মহাপ্রভু নিজ হস্তে পরিষদ বর্গকে সঙ্গে করে পুরীধামে তাঁর সমাধী স্হাপন করেন। রাজা রাম চন্দ্রের অত্যাচারের সময় গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু পরিষদ বর্গকে সঙ্গে করে এই বেনাপোল আশ্রমে আসেন। কথিত আছে অদ্বৈত মহাপ্রভুর হাতের স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে রেখে যান যা আজ অবনত মস্তকে দন্ডায়মান সু-বৃহৎ তমাল বৃক্ষ। এই সেই মাধবী লতা যেখানে বসে ঠাকুর হরিদাস বদ্ধ জীবগনের মুক্তির লক্ষ্যে দিন রাত তিন লক্ষ বার নাম যব করতেন। আজ ও বিদ্যমান সাড়ে পাঁচশত বছরের মাধবীলতা যা আজ বৃক্ষে পরিনত। এই সেই সিদ্ধপীঠ তীর্থভূমি। নামাচার্য্য শ্রী শ্রী ব্রহ্ম হরিদাস ঠাকুরের পাটবাড়ী আশ্রম। নামাচার্য্য শ্রী শ্রী ব্রহ্ম হরিদাস ঠাকুরের জীবনীর উপর বাংলাদেশ ও ভারতে বহু গ্রন্থ রচিত ও প্রকাশিত আছে এছাড়া চৈতন্য চরিতামৃত গ্রন্থে হরিদাস ঠাকুরের জীবনীর বিষদ আলোচনা রয়েছে যা থেকে আপনারা হরিদাসকে জানতে ও তার সাধনলীলা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে পারবেন।
ভগবানের নাম যখন ভগবানকে লক্ষ করে উচ্চারিত না হয়ে, অন্য কাউকে লক্ষ করে উচ্চারিত হয় তাহাই ''নামাভাস''। এই নামাভাসেও জীব উদ্ধার হয়। ''নামাভাসে মুক্তি হয় সর্বশাস্ত্রে দেখি,শ্রীভাগবতে তার অজামিল সাক্ষী''।।

ভাগবান শ্রী কৃষ্ণের পঞ্চম দোল যাত্রা উপলক্ষে ৩ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠান সূচি

🌹ওঁ নমো বাসুদেবায়ঃ ওঁ কৃষ্ণ কৃপাহি কেবলম 🌹 ভাগবান শ্রী কৃষ্ণের পঞ্চম দোল যাত্রায়। ভাগবত আলোচনা, পদাবলী কীর্ত্তন, ভজন কীর্ত্তন ও ভক্ত...